স্টাফ রিপোর্টার :
ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩২তম বার্ষিক ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার বাদ মাগরিব জিকির ও তা’লীমের পর ভাষণে গদ্দীনসীন পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন।
তিনি বলেন – ছারছীনা দরবার শরীফ একটি আধ্যাত্মিক দরবার। এখানে এসে যারা বাইয়াত গ্রহণ করেন, তারা মূলত: আমলী ইছলাহ ও তরীকা মশকের মাধ্যমে মহান আল্লাহর পেয়ারা বান্দা হওয়ার জন্যই বাইয়াত গ্রহণ করে থাকেন। নিয়মিত তরীকা মশকের মাধ্যমে একজন বান্দা প্রকৃত পক্ষে কামিল মু’মিন হিসেবে রুপান্তরিত হন। তার অন্তরাত্মার কুরিপুগুলি দূরীভূত হয়ে তদস্থলে সে আখলাকে হাসানার গুনাবলীর দ্বারা ভূষিত হয়ে থাকে। তাইতো রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- “আমি প্রেরিত হয়েছি উত্তম চরিত্রকে পূর্ণতা প্রদানের উদ্দেশ্যে”। বলা বাহুল্য দরবারে নববীতে বসে সাহাবায়ে কেরাম একান্ত ভাবে এই চারিত্রিক উৎকর্ষতাই অর্জন করতেন । তাই বর্তমান সময়ে হক্কানী পীরের সোহবত এখতিয়ার করে নবী ওয়ালা ও সাহবী ওয়ালা চরিত্র অর্জনের কোশেশ করা হয়ে থাকে।
হযরত পীর ছাহেব কেবলা বইয়াত গ্রহণের পর মুরীদ হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে চিশতিয়া তরীকার প্রথম সবক প্রদান করেন। তিনি বলেন, যারা মুরীদ হলেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জুমার নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করবেন। নেসফে সাক গোল জামা পরবেন। মাথায় টুপি ও পাগড়ী পরিধান করবেন। দঁড়ি ছাটবেন না,কাটবেন না। বিড়ি-সিগারেট পান করবেন না। হালাল খানা খাবেন, হারাম থেকে পরহেজ করবেন। ঘরে বাইরে পর্দা করবেন। নিয়মিত ওজীফা পালন করবেন। অজীফার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন- প্রত্যহ বাদ মাগরিব সুন্নাতের পর দুই দুই রাকায়াত করে ছয় রকায়াত আউয়াবীনের নামাজ পড়বেন। অত:পর তিনবার সূরা ফাতিহা, দশবার সূরা ইখলাস ও এগার বার দরূদ শরীফ পড়ে ছাওয়াব রেসানী করবেন। এরপর নিয়্যাত করে তিনশত বার নফী-এছবাত জিকির করবেন। বাদ এশা একশতবার দরূদ শরীফ পড়বেন। বাদ ফজর জায়নামাজে বসে দরূদ শরীফের আমল করবেন। তারপর সূর্য উদিত হবার পর চার রকায়াত ইশরাক নামাজ আদায় করবেন। সকলকে তা’লীমের হালকায় বসায়ে হযরত পীর ছাহেব কেবলা জিকিরের তা’লীম দেন এবং দরূদ শরীফ মুখে মুখে পাঠ করান। দরূদ শরীফ আমলের বিষয়ে তিনি বলেন-নিয়মিত দরূদ শরীফের আমল করলে ভাগ্য ভাল হলে স্বপ্নে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যিয়ারত নসীব হতে পারে।
আজ দ্বিতীয় দিবসে মাহফিলে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন- বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, পিরোজপুর জেলার পুলিশ সুপার, স্বরূপকাঠী পৌর সভার মেয়র ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদার্রেসীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী।
মাহফিলের দ্বিতীয় দিবসে ওয়াজ ও বক্তৃতায় অংশ গ্রহণ করেন- বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর নাযেমে আ’লা অধ্যক্ষ ড. মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ শরাফত আলী, উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ রূহুল আমিন ছালেহী, শাইখুল হাদিস মাওলানা মোঃ আব্দুল গফ্ফার কাসেমী, মুফতী মাওলানা মোঃ হায়দার হুসাইন, বাংলাদেশ যুব হিযবুল্লাহর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা কাজী মোঃ মফিজ উদ্দীন।
আগামীকাল মাহফিলের শেষ দিন। বাদ জোহর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে হযরত পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন।