পাথরঘাটা উপজেলার নির্বাহী হাকিম সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, নানা অনিয়ম, অবস্থাপনা ও অভিযোগের প্রমাণের ভিত্তিতে শাপলা ক্লিনিক সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার উপজেলার শাপলা ক্লিনিকে এক নারী রোগী ভর্তি হন। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাঁর অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। পরে রাত দশটার দিকে তাঁর অস্ত্রোপচার শুরু করেন ক্লিনিকের চিকিৎসক ও পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক চিকিৎসা কর্মকর্তা বশির আহমেদ। কিন্তু অস্ত্রোপচার শুরু করে তিনি দেখতে পান ওই রোগীর অ্যাপেন্ডিসাইটিসের পাশে একটি টিউমার রয়েছে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে তিনি রোগীর স্বজনদের কাছে এই অস্ত্রোপচার করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে তিনি কাটাছেঁড়া অংশ সেলাই করে রোগীকে ক্লিনিকের বেডে পাঠান এবং রোগীকে দ্রুত বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এবং রোগীর স্বজনদের নির্দেশ দেন।
কিন্তু রোগীকে বরিশালে না পাঠিয়ে ঢাকা থেকে আসা তরুণ কুমার নামের আরেক চিকিৎসক গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বার ওই রোগীকে অস্ত্রোপচার করেন। এ সময় টিউমারের সঙ্গে রোগীর নাড়ির প্যাঁচ দেখে তিনিও এই অস্ত্রোপচার করতে অস্বীকৃতি জানান এবং বরিশালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু একই স্থানে দুবার অস্ত্রোপচার করায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই রোগী। এরপর রোগীর বাবা চিকিৎসক বশির আহমেদ, তরুণ কুমার সিকদার, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, ক্লিনিকের মালিক মকবুল হোসেন মিলন, ম্যানেজার মোহাম্মদ মিলন, নার্স মনিকাকে আসামি করে মামলা করেন। আজ রোববার ক্লিনিক সিলগালার পর রোগীকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
এদিকে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলাকে হয়রানিমূলক আখ্যা দিয়ে পাথরঘাটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক মালিক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন এবং চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখেন। এতে ভোগান্তিতে পড়ে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা। রোববার বেলা ২টার দিকে ক্লিনিক মালিক সমিতির সঙ্গে জরুরি সভা করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়ম মেনে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার সাইফুল হাসান। তবে মালিক সমিতি ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।