পটুয়াখালী (বাউফল) প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের অফিস নির্মাণে বাধা দেয়াসহ দুজন আওয়ামীলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের নিমদী খেয়া ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় আহত মো. খোকন ব্যাপারি (৩৫) ও মোঃ কাওসার ইসলাম (২৪) কে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বাউফলে দুইটি গ্রুপ র সক্রিয় রয়েছে।
এক গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ সদস্য আসম ফিরোজ এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র মো. জিয়াউল হক জুয়েল।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে আলকাস মোল্লা স্থানীয় সংসদ সদস্য আসম ফিরোজের ভাতিজা। তিনি এমপি গ্রুপের সমর্থক। অন্যদিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন নির্বাচনে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মরহুম আমির হোসেনের পরিবার মেয়র জুয়েল গ্রুপের সমর্থক। মরহুম আমির হোসেনের সমর্থকরা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের নিমদী খেয়াঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগের অফিস করার প্রস্তুতি নেয়। এঘটনার পরে রবিবার আলকাস মোল্লার সমর্থকরা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মহরা দেয়।
এরপর সন্ধ্যায় আলকাস মোল্লা ভুক্তভোগী খোকন ব্যাপারিকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে তুই কই, সে খেয়াঘাট উত্তর দিলে চেয়ারম্যান বলেন, “তুই থাক আমি আসতেছি”। এরপরে চেয়ারম্যান, ১নং ওয়ার্ড মেম্বার লিটন ও ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার দুলাল হোসেনসহ ২৫/৩০ জনের একটি দল খেয়াঘাটে উপস্থিত হয়।
কার অনুমতি নিয়ে আওয়ামী লীগের অফিস নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছ প্রশ্ন করেন চেয়ারম্যান। এসময় চেয়ারম্যানের সাথে থাকা লোকজন খোকন ব্যাপারি ও স্থানীয় খেয়াঘাটের টাকা তোলার দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধি কাওসার ইসলামের ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। খোকন ও কাওসার পৌর মেয়র জুয়েল গ্রুপের সমর্থক।
ভুক্তভোগী কাওসার ইসলাম বলেন, আমরা জুয়েল (মেয়র) ভাইয়ের ক্লাব নির্মান করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সবেমাত্র খুটি গাড়া সম্পন্ন হয়েছে। সন্ধ্যায় হঠাৎ চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এসে অফিস নির্মাণ করার কারণে আমাদের কুপিয়ে জখম করেন। এসময় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সংবলীত ব্যানার ভাংচুর করে নদীতে ফেলে দেয় তারা।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার দুলাল হোসেন বলেন, চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া তার ইউনিয়নে কেনো ক্লাব (অফিস) নির্মাণ করা যাবে না৷ এজন্য সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। তবে কোন ব্যানার ফেস্টুন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. লিটন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এরকম কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। আমি অসুস্থ গত তিনদিন বাসাতেই আছি।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দিবা দেবনাথ বলেন, তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিনহ দেখা গেছে তবে আঘাত গুলো গ্রেভিয়াস না।
এ বিষয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে সংযোগ পাওয়া যায়নি। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।