স্টাফ রিপোর্টার :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়াহ মুইজ্জুদ্দিন ওয়াদ্দৌলাহর সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ও ব্রুনাই দারুস সালামের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োাগে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়া মুইজ্জুদ্দিন ওয়াদ্দৌলাহর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ কথা বলেন।
ব্রুনাইয়ের সুলতানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ব্রুনাইয়ের ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
এ লক্ষ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় একসঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
এছাড়া একটি যৌথ পরামর্শ কমিশন গঠন করে সমস্যা থাকলে তা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছে উল্লেখ করে ব্রুনাইয়ের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসার আমন্ত্রণ জানান।
ড. মোমেন বলেন, ব্রুনাইয়ের সুলতান বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও মৎস্য ও হালাল মাংস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জ্বালানি বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে হাজী হাসানাল বলকিয়া বলেন, তারা বাংলাদেশকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সহায়তা করবেন।
ব্রিফিংয়ে সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কৃষি ও মৎস্য, সেবা খাত, তথ্য ও প্রযুক্তি পেশাজীবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যন্ত মেধাবী কর্মী রয়েছে এবং তারা ব্রুনাইয়ের জনবল চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কমিশন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও তাদের দেশে ফিরে যায়নি।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনো লক্ষ্যে শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন আসিয়ান তা দেখছে বলে উল্লেখ করেন হাজী হাসানাল বলকিয়া।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রুনাইয়ের সুলতান আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগের অংশীদার হতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন।
বাংলাদেশ ও ব্রুনাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে একসঙ্গে কাজ করে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, বিশেষ করে মানবাধিকার কাউন্সিলে ব্রুনাই বাংলাদেশকে সমর্থন করেছে।
হাজী হাসানাল বলকিয়া কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিশেষভাবে প্রশংসা করেন।
আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, শুধু পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে না তাকিয়ে পূর্বাঞ্চল ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, এ অঞ্চলের দেশগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে তাদের সবারই অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
আজ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে সুলতানের সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে ব্রুনাই সুলতানের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।