ছারছীনা থেকে মোঃ আবদুর রহমান :
ছারছীনা দরবার শরীফের চলমান ১৩১ তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিলে আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) বলেছেন- হাদীসে উল্লেখ আছে- বণী ইসরাইল সম্প্রদায় ৭২ ফেরকায় বিভক্ত হয়েছিল। নবীজী (সাঃ) বলেন, অচিরেই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, তন্মধ্যে একটি দল ব্যতীত সকলেই জাহান্নামী হবে। সেই নাজীদল হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত। মনে রাখতে হবে জাহান্নামী ৭২ দলের সবাই ইসলামের দাবীদার হবে এবং ইসলামের অনুশাসনও পালনকারী হবে কিন্তু তাদের আক্বীদা ও বিশ্বাসে ইসলামের মৌলিক বিষয়ের বিরোধিতা বিদ্যমান থাকায় তারা জাহান্নামী হবে।
উদাহরন দিয়ে হযরত পীর ছাহেব কেবলা বলেন- হযরত আলী (রাঃ) কে কাফের মনে করে যে ব্যক্তি শহীদ করেছিলো সেই আব্দুর রহমান বিন মুলজেম একজন মস্তবড় আবেদ ও জাকের ব্যক্তি ছিল। কিন্তু খারেজী মতবাদে বিশ্বাসী হবার কারণে সে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী নবীজী (সাঃ)-এর আদরের জামাতা হযরত আলী (রাঃ) কে পর্যন্ত কাফের সাব্যস্ত করতে দ্বিধা বোধ করেনি এবং তাকে হালালুদ্দম মনে করে শহীদ করেছিল।
সমবেত জনতাকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরও বলেন- বর্তমানে পূর্বেকার খারেজী, রাফেজী ও মুতাজিলা ফেরকার অস্তিত্ব না থাকলেও নূতন নূতন মোড়কে তাদের আক্বীদা এখনও সমাজে বিদ্যমান আছে। বাতেল আক্বীদার কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন- একদল লোক তারা হায়াতুন নবীতে বিশ্বাস করেনা, তারা নবিজীকে সাধারণ মানুষ মনে করে। আরেকদল নিজেদেরকে সালাফী দাবী করলেও ইমাম আযম আবু হানীফা (রহঃ) যিনি একজন তাবেয়ী ছিলেন তাকে গালি দেয়, অন্য এক দল সাহাবায়ে কেরামকে সত্যের মাপকাঠী মানতে রাজী নয়। তারা পীর-মুরীদী এবং তরীকা-তাসাউফকে শিরক জ্ঞান করে। কেউ আবার ইজমা-কিয়াসকে দলীল হিসেবে মানতে চায়না। কতকে কবর জিয়ারত করাকে হারাম মনে করে। তারা হজ্বের সময়ে মদীনা শরীফে জিযারতে যেতেও বাঁধা দিয়ে থাকে। কাদিয়ানী, শিয়া, বাহায়ী ইত্যাদি বাতিল ফিরকার কথা বাদ দিলাম। একদল লোক নবীওয়ালা কাজ করে অথচ তারা বলে নবীজীর গোনাহ ছিল।
[caption id="attachment_3812" align="alignright" width="385"] ছরছীনা দরবার শরীফের মাহফিলে ২য় দিনে আগত মেহমানবৃন্দদের একাংশ[/caption]
তাই সাবধান ! অনেকেই ধোকার জাল বিস্তার করে আমাদের ঈমানকে গ্রাস করার জন্য ফঁদ পেতে আছে। যারা বাহ্যিক চাকচিক্য ও মুখরোচক শ্লোগানে বিভ্রান্ত হয়ে সেসব ফাঁদে ধরা পড়বে তারা নিশ্চিত হালাক হবে। তাই হক্ব আক্বীদা জেনে তার উপর মজবুত থাকতে হবে। তিনি সকলকে ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দেদে যামান শাহ্সূফী আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী এবং ছারছীনার দাদা হুজুর কেবলা শাহ্সূফী নেছার উদ্দীন আহমদ (রহঃ) এর পথ ও মত অনুসরণের প্রতি উৎসাহিত কেেরন।
আজ মাহফিলের ২য় দিবসে বাদ মাগরীব হযরত পীর ছাহেব কেবলা একথা বলেন।
মাহফিলের ২য় দিন বাদ ফজর জিকিরের তা’লীম দেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও হযরত পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন। এছাড়াও বিষয়ভিত্তিক কুুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামগণ তাদের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ পেশ করেন। যারা বয়ানে অংশ নেন তাদের মধ্যে- মাওঃ মোঃ রূহুল আমিন ছালেহী, মাওঃ মাহমুদুম মুনীর হামীম, মাওঃ মোঃ আবদুল গফ্ফার কাসেমী, মাওলানা কাজী মফিজ উদ্দীন, মুফতী হায়দার হুসাইন, মাওঃ শামসুল আলম মুহেব্বী প্রমুখ।
আগামীকাল মাহফিলের শেষ দিন। এদিন বাদ জোহর হযরত পীর ছাহেব কেবলা দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে তিনদিনব্যাপী মাহফিলের আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন ইনশাআল্লাহ।