1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. ittehadnews24@gmail.com : Ittehad News24 : ইত্তেহাদ নিউজ২৪
বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
হাতেখড়ি ফাউন্ডেশনের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে নলছিটিতে বিক্ষোভ মিছিল ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকেট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে -ধর্ম উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্বের মদদে ইসরাইল যুগের পর যুগ ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে – খেলাফত মজলিস মানবতার শত্রু ইসরাইলকে রুখতে বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই -বিবৃতিতে ছারছীনার পীর ছাহেব মৌলিক ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে ছারছীনার বিকল্প নেই -আলহাজ্ব এ. এম. এম. বাহাউদ্দীন কুরআন-সুন্নাহ ও তাকওয়া ভিত্তিক জীবন গঠনই তরীকা তাসাউফ চর্চার মূল লক্ষ্য – ছারছীনার পীর ছাহেব ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয় অনলাইন প্রেস কাউন্সিল- কেন্দ্রীয় কমিটি জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য – ছারছীনার পীর ছাহেব। দ্বীনদার-পরহেজগার মানুষ গড়তে ছারছীনার অবদান অনন্য – ছারছীনার পীর ছাহেব।
শিরোনাম
ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে নলছিটিতে বিক্ষোভ মিছিল ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকেট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে -ধর্ম উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্বের মদদে ইসরাইল যুগের পর যুগ ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে – খেলাফত মজলিস মানবতার শত্রু ইসরাইলকে রুখতে বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই -বিবৃতিতে ছারছীনার পীর ছাহেব মৌলিক ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে ছারছীনার বিকল্প নেই -আলহাজ্ব এ. এম. এম. বাহাউদ্দীন কুরআন-সুন্নাহ ও তাকওয়া ভিত্তিক জীবন গঠনই তরীকা তাসাউফ চর্চার মূল লক্ষ্য – ছারছীনার পীর ছাহেব ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয় অনলাইন প্রেস কাউন্সিল- কেন্দ্রীয় কমিটি জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য – ছারছীনার পীর ছাহেব। দ্বীনদার-পরহেজগার মানুষ গড়তে ছারছীনার অবদান অনন্য – ছারছীনার পীর ছাহেব। মুসলিম দাবি করতে হলে প্রকৃত মুসলিম হতে হবে – ছারছীনার পীর ছাহেব।

হযরত মাওলানা মির্জা মুহাম্মদ এনায়েতুর রহমান বেগ (রহঃ) মৃত্যুর ৩৩ বছর পরও যে স্মৃতি অম্লান -অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ

  • আপডেট করা হয়েছে বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩১৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার :

বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে অসংখ্য মাদ্রাসা মসজিদ খানকা প্রতিষ্ঠা করে কুরআন ও হাদীসের শিক্ষা প্রচারে যাদের মহান অবদান রয়েছে, তাদের মধ্যে আলহাজ হযরত মাওলানা মির্জা মুহাম্মদ এনায়েতুর রহমান বেগ আল কাদেরী (রহ.) সাহেব অন্যতম। ১৯৩৯ সনের এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ মোতাবেক ১৩৪৬ সালের ১লা বৈশাখ সোমবার সুবহে সাদিকের পবিত্র সময়ে বরিশালে তাঁর জন্ম হয়। তার পিতা বিখ্যাত পীর আলহাজ হযরত মাওলানা ইয়াছিন বেগ আল কাদেরী (রহ.) ছিলেন একজন ওলিয়ে কামিল ও বুজুর্গ ব্যক্তি। তাই পারিবারিকভাবে সম্ভ্রান্ত আলিম বংশের সন্তান হিসেবে ধর্মীয় পরিবেশেই বড় হতে থাকেন মাওলানা মির্জা এনায়েতুর রহমান বেগ।

বরিশাল শহরের আমানতগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাহমুদিয়া মাদ্রাসায় শুরু হয় তাঁর শিক্ষা জীবন। এ মাদ্রাসা হতেই সর্বোচ্চ শিক্ষা লাভ করেন তিনি। প্রকৃত জ্ঞানী সর্বদাই জ্ঞানের অতৃপ্তিতে ভোগেন। কুরআন-হাদীস ও ইসলামী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করেও মির্জা এনায়েত বেগ অতৃপ্ততার যাতনা অনুভব করেন। জ্ঞান স্পৃহা তাঁকে বেকারার করে তোলে। তাই তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ‘বাংলার দেওবন্দ’ হিসেবে খ্যাত ‘দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী’ মাদ্রাসায় ইলম শিক্ষার জন্য ছুটে যান। দেওবন্দ থেকে বড় বড় শায়খগণ এখানে প্রায়ই তশরিফ আনতেন বিধায় তাদের সাহচর্য লাভের ইচ্ছা ও আকাঙ্খা ছিল তাঁর প্রবল। হাটহাজারী থেকে সকলকে মুগ্ধ করে ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু এখানেই তিনি থেমে থাকেননি। শরীয়াতের ইলম শিক্ষা সমাপ্ত করে ইলমে মারিফত শিক্ষা গ্রহণে তিনি আত্মনিয়োগ করেন, স্বীয় পিতার কামিল ওলী হযরত মাওলানা ইয়াছিন আল কাদেরী (রহ.) এর হাতে বয়াত গ্রহণ করে মারিফতের শিক্ষা ও অনুশীলন শুরু করেন। অল্পকালের মধ্যেই তিনি চারি তরিকায় পূর্ণ কামালিয়াত হাসিল করেন। এরপর স্বীয় পিতার নির্দেশে দ্বীন প্রচারে মনোনিবেশ করেন অতি অল্প সময়েই সর্বগুণে গুণান্বিত আবেদ, আলেম, ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার নাম দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ১৯৬৩ ইং সনের নভেম্বর মাসে বিশ্ব বিখ্যাত পীর, কামিল ওলী কুতুবে যামান হযরত মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মদ ছালেহ (রহ.) এর প্রথমা কন্যার সাথে মির্জা এনায়েতুর রহমান বেগ সাহেবের শাদী মোবারক সুসম্পন্ন হয়।

এ ঘটনায় বেগ সাহেবের জীবনে বহুমুখী চেতনার বিকাশ ঘটে। একদিকে স্বীয় পিতার দীক্ষা অন্যদিকে যুগশ্রেষ্ঠ ওলী শ্বশুরের নেক ফয়েজে তিনি সাহসাই আধ্যাত্মিক জগতের উচ্চ মার্গে পৌঁছে যান। উভয় দিক থেকে তিনি খিলাফতপ্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাদ্রাসায় দ্বীনী শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি জনসাধারণকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও শিক্ষাদান করতে থাকেন। ১৯৭০ ইং সনে তাঁর মহান পিতা ইন্তেকাল করেন। এরপর তিনি বরিশালের ঐতিহ্যবাহী জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের খতিব হিসেবে পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। ইতোপূর্বে তিনি চর কাউয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। এরপর ১৯৭২ ইং সনে তিনি বরিশাল মাহমুদিয়া মাদ্রসার সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। একই সনে তিনি মাদ্রাসার কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ তিনটি পদে অধিষ্ঠিত থেকে কুরআন ও হাদীসের খিদমত করেছেন। তৈরী করেছেন ইসলামের অসংখ্য খাদেম, মুবাল্লিগ, হাফেজ, আলিম ও ক্বারী। তিনি (১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৭৮ এবং ১৯৮৭ ইং সনে) মোট চারবার পবিত্র হজব্রত পালন করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তিনি মিশর, ইরাক, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ সফর করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, ১৯৭৫ সনে বাগদাদে বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) এর মাযার শরীফে তিনি দীর্ঘদিন অবস্থান করে ইরাকের তৎকালীন পীর ও বড়পীর ছাহেবের মাযার মসজিদের পেশ ইমাম ও খতীব হযরত ইউসূফ জিলানী (রহ.) এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন তাঁর কর্তৃক খিলাফতপ্রাপ্ত হন।

মাদ্রাসায় শিক্ষা দানের পাশাপাশি তিনি দেশের বহু অঞ্চলে ব্যাপক সফর করে মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ব্যাপৃত থাকেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি বহু মাদ্রাসা, মসজিদ, মক্তব, খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

মির্জা এনায়েত বেগ সাহেব দীনের প্রচারের জন্য অনেক গ্রন্থও রচনা করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে কুরবানী কি ও কেন, ঈদ মোবারক, রমজানুল মোবারক, শবে ক্বদর, মাহে মুহাররম ও শবে বরাত প্রভৃতি অন্যতম। রমজানুল মোবারক গ্রন্থটি দীর্ঘদিন পরে এ বছর রমজানে নতুন করে প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু বিপুল চাহিদার কারণে স্বল্প সময়েই তা নিঃশেষ হয়ে যায়।

১৯৮৮ সনের ১২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকা আগমনের সময় লঞ্চে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৩ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদে বাংলাদেশের সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। ঐ দিন বাদ আছর ঢাকায় বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে হাজার হাজার আলিম ওলামা পীর মাশায়েখ অংশগ্রহণ করেন। জানাজায় ইমামতি করেন ততকালীন খতিব মাওলানা উবায়দুল হক। বরিশালে দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিখ্যাত পীর কুতুবুল আকতাব শাহ আবু জাফর মুহাম্মদ ছালেহ (রহ.) জানাযায় ইমামতি করেন। তাতে মরহুম চরমোনাই পীর সাহেব সৈয়দ ফজলুল করিম র. সহ দক্ষিণাঞ্চলের সকল দরবারের পীরসাহেবসহ অসংখ্য ওলামা-মাশায়েখ ও লক্ষ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হন। বরিশালের বিশাল ঈদগাহ মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় একইসাথে পাশের বঙ্গবন্ধু উদ্যান (সাবেক বেলস পার্ক) নিয়ে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বরিশালের কেন্দ্রীয় মুসলিম গোরস্থানে তাঁর পিতার পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর সুযোগ্য মেজ ছেলে মাওলানা মির্জা নুরুর রহমান বেগ জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে পিতার স্থলাভিষিক্ত হন।

তার ছিল বহু গুণগ্রাহী, ভক্ত ও মুরিদ। আচারে-ব্যবহারে, ইলমে আমলে তিনি একজন কামিল ওলীরই প্রতিচ্ছবি ছিলেন। তাঁর সাথে যিনি একবার কথা বলেছেন, সংস্পর্শে এসেছেন প্রয়োজনে কি অপ্রয়োজনে তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, জীবনে তিনি তাঁকে ভুলতে পারেনি। তাঁর কথায় আচরণে ছিল এক যাদুকরী প্রভাব। মানুষকে চুম্বকের মত আকর্ষন করত তাঁর ব্যক্তিত্ব। কি হিন্দু, কি মুসলিম, কি অন্য ধর্মের লোক, কি শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত, কি চেনা অচেনা, যে একবার তাঁকে দেখেছে হৃদয়ে তার দাগ কেটেছে গভীরভাবে। আর্তপীড়িতদের সেবা ও সমাজ সেবামূলক বহু কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহন করে তিনি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন। মরহুম মাওলানা মির্জা এনায়েতুর রহমান বেগ র. তাই মরেও অমর হয়ে আছেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর মরহুমের ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। এদিনে আমরা তাঁকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Categories