স্টাফ রিপোর্টার :

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে নতুন করে বিধিনিষেধ শুরুর দিন ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৬৪ জন।

এক দিনে এর আগে কখনও এত বেশি মানুষের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। এর আগে দেশে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড হয়েছিল গত ৭ এপ্রিল। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৬২৬ জনের শনাক্তের কথা জানানো হয়।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে মারা গেছে মোট ১৪ হাজার ২৭৬ জন। আর শনাক্ত হয়েছে মোট আট লাখ ৯৬ হাজার ৭৭০ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৬৬৩ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৬৮ জন পুরুষ আর ৩৬ জন নারী।

এদের মধ্যে বেশি ৫৮ জনের বয়সই ছিল ৬০ এর বেশি। বাকিদের মধ্যে ২৩ জনের বয়স ৫০ থেকে ৬০, ১৪ জনের বয়স ৪০ থেকে ৫০, চার জনের বয়স ৩০ থেকে ৪০ এবং ৫ জনের বয়স ২০ থেকে ৩০ এর মধ্যে।

আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। দেশে এখন পর্যন্ত এক দিনে মৃত্যুর রেকর্ড এটিই।

গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণের পর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভাইরাসটি আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠার পাশাপাশি মৃত্যুর হারও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন বা বিধিনিষেধ সীমিত করে দেশে যে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ‍শুরু হয়েছিল সেটিও আবার থামিয়ে দেয়া হয়েছে।

ভারতীয় সীমান্তে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার পর জেলায় জেলায় স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ দিয়ে ঢাকাকে অবরুদ্ধ করার পর এবার তিন দিনের মধ্যে নতুন করে বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে সোমবার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গণপরিবহন।

তবে আরও কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকে মানুষ যেন কোনোভাবেই অকারণে বাড়ির বাইরে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। এবার মাঠে নামানো হচ্ছে সেনাবাহিনীকে।

শনাক্তের হারও বেড়েছে

২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫৬৪ ল্যাবে ৩৫ হাজার ৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ২৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

আগের দিন পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

আর গত বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত জন মানুষ পরীক্ষা করিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশের করোনা ধরা পড়েছে।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের রেকর্ড, মৃত্যু আবার শতাধিক

গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৫৭০ জন সুস্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩জন। সুস্থতার হার ৯০.০৬ শতাংশ।

মৃত্যু বেশি খুলনা বিভাগে

করোনার প্রথম ঢেউয়ে বেশি মৃত্যু প্রায় প্রতিদিনই ছিল ঢাকা বিভাগে। তবে গত কয়েক দিনে খুলনা বিভাগে বেশি মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপরই রয়েছে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭, বরিশালে ২, রংপুর বিভাগে ৯ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ মৃত্যু হয়েছে।

দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কথা ঘোষণা করে।