চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
অপ্রয়োজনে ইউএসটিসি’র নবনির্মিত ভবন না ভাঙ্গতে সিডিএ’র প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ সোমবার (২৮ জুন ২০২১ইং) বেলা ১২টায় ইউএসটিসি’র প্রতিনিধিদল তার বাসভবনে সৌজন্য স্বাক্ষাত করতে আসলে তিনি সিডিএ’র প্রতি এ অনুরোধ জানান।
এ সময় তিনি বলেন ইউএসটিসি’র প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রামের সন্তান হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞাণে তার সুখ্যাতি চট্টগ্রামের গন্ডি পেরিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত। ৭১’র মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি পিজি হাসপাতালের দায়িত্ব থাকাকালে বহু মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ডা. নুরুল ইসলামের ছিল গভীর সম্পর্ক। যে কারণে তিনি বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) প্রতিষ্ঠা করেন। উচ্চশিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে এবং চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা বিজ্ঞাণসহ বিভিন্ন বিভাগে দক্ষ করে তোলাই ছিল যার মূল লক্ষ্য। যে প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশ বিদেশের বহু শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে যোগ্যতার সাথে সমাজ এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন।
কিন্তু গত মার্চ মাসে নগরীর জাকির হোসেন সড়ক সংলগ্ন ‘গয়না ছড়া খালের’ জমিতে গড়ে তোলার অভিযোগে ১৮তলা ভবনটির একাংশ উচ্ছেদ শুরু করে সিডিএ। খবরটি চট্টগ্রামের সচেতন মহলের মতো আমার হৃদয়কেও ব্যথিত করে তোলে। নিশ্চয়ই সিডিএ চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে মেগা প্রকল্পের আওতাধীন সিডিএ’র প্রকল্পসমূহ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা অনেকাংশে নিরসন হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। তবে যে প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ বছরের পর বছর চট্টগ্রামের চিকিৎসা বিজ্ঞাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সে প্রতিষ্ঠানের ১৮ তলা ভবনটি যদি ভেঙ্গে ফেলা হয় তাহলে এর প্রভাব প্রথমেই পড়বে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের উপর। আমরা জানি সিডিএ’র চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের স্বনামধন্য পরিবারের সন্তান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে উনাকে সিডিএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্বটি অর্পন করেছেন। তিনি চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয় এরকম কোন কাজ করবেন না বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
এছাড়া ভবনটি না ভাঙ্গা বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের একটি নির্দেশনাও রয়েছে। যেহেতু প্রতিষ্টানটি চট্টগ্রামের ৬০ লক্ষ মানুষের সম্পদ তাই আমরা সিডিএকে অনুরোধ জানাবো যৌথ সার্ভে করে আর.এস, পি.এস মোতাবেক ভবনটি যদি খালের মধ্যে না থাকে তাহলে সেই ভবনটি ভাঙ্গা থেকে সিডিএ যেন বিরত থাকে। জেদের বশবর্তী হয়ে চট্টগ্রামের সন্তানদের শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা ইউএসটিসি’র ভবনটি না ভাঙ্গার জন্য সিডিএ চেয়ারম্যানের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানান সুজন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউএসটিসি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, আইএএইচএস-এর গভর্ণিং বডির সদস্য ডা. শেখ মাহসিদ নুর, বিএমএইচ-এর পরিচালক ডা. কামরুল হাসান, ইউএসটিসি’র রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) দিলীপ কুমার বড়ুয়া ও সহকারী রেজিস্ট্রার আবু রাশেদ প্রমূখ।