কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্করভাবে বাড়ছে। রবিবার জেলায় সর্বোচ্চ ৩৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছেন। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে জেলার মোট ১১৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩৯টি নমুনা পজিটিভ আসে। এতে শনাক্তের হার ৩৩.৩৩%।
নতুন শনাক্ত রোগীর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৩৩ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় দুজন, কুমারখালীতে একজন ও খোকসা উপজেলায় তিনজন। এনিয়ে জেলায় মোট ৪ হাজার ৩৪৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ৯৬৩ জন।
রবিবার জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছেন। তারা হলেন-শহরের টালিপাড়া এলাকার তোফাজ্জল হোসেন সেলিমের স্ত্রী বিউটি খাতুন (৪০) ও আড়ুয়াপাড়া এলাকার হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী মজনু হোসেন (৬০)। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ৯৪ জন রোগী।
এদিকে, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, মাঝে আক্রান্তের পরিমাণ কমে আসলেও মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে কুষ্টিয়া জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করেছে। এপ্রিল মাসে শুরু থেকে আক্রান্ত হওয়ার গতি আরো বেড়ে গেছে।
গত ১০ দিনেই জেলায় মোট ২৪৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২ এপ্রিল ৩৫ জন, ৩ এপ্রিল চারজন, ৪ এপ্রিল ৩০ জন, ৫ এপ্রিল ৩৭ জন, ৬ এপ্রিল ২২ জন, ৭ এপ্রিল ১৭ জন, ৮ এপ্রিল ৩১ জন, ৯ এপ্রিল ২২ জন, ১০ এপ্রিল ১০ ও ১১ এপ্রিল ৩৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে, জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে গেলেও প্রশাসনের তেমন একটা তৎপরতা চোখে পড়ছে না। গত ৫ এপ্রিল সরকার সারা দেশে লকডাউনের ঘোষণা দিলেও কুষ্টিয়া শহরে কিছু দোকানপাট বন্ধ থাকা ছাড়া তেমন কোন প্রভাবই পড়েনি।
বিশেষ করে ৭ দিনের এ লকডাউন চলাকালে গণপরিবহন না চললেও ইজিবাইক, রিকশাসহ প্রাইভেট গাড়ির দখলে ছিল শহরের রাস্তাঘাট। শহরের দোকানপাট আপাত দৃষ্টিতে বন্ধ থাকলেও কেনাবেচা চলছে তার মধ্যেই। দোকানিরা দোকানের সামনেই থাকছেন। ক্রেতা এলে সাটার খুলে প্রয়োজনীয় দ্রব্য বেচে আবার সাটার বন্ধ করে দিচ্ছেন।
তবে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা কাঁচাবাজারগুলোতে। সেখানে মানুষ থই থই করছে। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। জেলার ৬ উপজেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলেও একই অবস্থা বলে খবর পাওয়া গেছে। লকডাউনের সময় সরকার ঘোষিত ১৮ দফা কার্যকরে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।