ধর্মীয় প্রতিবেদকঃ
কারবালার কতিপয় শিক্ষাঃ
কারবালা একটি বিজন মরুভূমি। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সে নিরীখে কারবালার ঘটনা থেকে শিক্ষনীয় কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলঃ
১. তাৎক্ষনিক জয়ই কখনো স্থায়ী পরাজয় হতে পারে। ইয়াজিদ তার প্রমান।
২. সমরে পরাজয় ও আত্মত্যাগ কখনো মানুষের অন্তর রাজ্য জয় করতে সক্ষম হয়। ইমাম হুসাইন রাঃ শহীদ হয়ে তাই করে গেছেন।
৩. ঐতিহাসিক মূল্যায়ন কখনো শুধু ক্ষমাতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে নিয়ে হয় না প্রতিপক্ষকে নিয়ে করতে হয়। ইয়াজিদের প্রতিপক্ষ ইমাম হুসাইন রাঃ না হয়ে অন্য কেউ হলে মূল্যায়ন ভিন্ন হতো।
৪. ইমাম হুসাইন রাঃ এর সম্মুখে শাহাদাত বরণ ব্যতীত অন্য কোন পথ খোলা ছিল না। কেননা তিনি জানতেন যে,পরিস্থিতির আলোকে তিনি নতি স্বীকার করলেও সমর নীতির তোয়াক্কা না করে বিন জিয়াদ তাকে ঠিকই শহীদ করতো।
৫. ইয়াজিদ তার কৃতকর্মের পরিণাম ঠিকই আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই তার কবরের সন্ধান কেউ যাতে না জানতে পারে তার ব্যবস্থা করে গিয়েছিলেন।
৬. ইয়াজিদের রক্তও তাকে ক্ষমা করে নাই। স্বীয় পুত্র মুয়াবিয়া পিতার কলংকিত সিংহাসন ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
৭. কারবালা হতে শিক্ষা নিয়েই যুগে যুগে ওলামা-মাশায়েখ, সুফী-দরবেশ এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিবর্গ ক্ষমতার বাইরে অবস্থানকে বেছে নিয়েছেন।
৮. ইতিহাসের নির্মম বিচার ইয়াজিদের প্রতি কম হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ ছিলনা । কেননা সে সত্যের যুগে (তাবেয়ীদের যুগে) এসেও ফাসেকী কাজ করেছিল এবং স্বীয় পিতা সত্যের মাপকাঠী বিচক্ষণ শাসক আমীর মুয়াবিয়া রাঃ এর নীতি ও আদর্শ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছিল।
৯. ইমাম হুসাইন রাঃ বাহ্যত দৃষ্টিতে কুফয় গিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করবেন মনে হলেও বাস্তবতা ভিন্ন ছিল। কেননা তিনি কুফার লোকদের অনুরোধে এবং কুফার পরিবেশ অনুকুল জেনেই কেবল সেখানে যাচ্ছলেন। বাধা প্রাপ্ত হওয়া মাত্রই তিনি মদীনায় ফিরে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু যেতে দেয়া হয়নি। কুফায় যেতে পারলে অবশ্যই তিনি পরিস্থিতির আলকে শান্তির পথ বেছে নিতেন। বস্তুতঃ ইয়াজিদ যদি ন্যায়-নীতির পথে চলত তাহলে কোন সংঘাচতই হতো না।
১০. কারবালার যুদ্ধের পর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী ইয়াজিদ বাহিনীর সৈন্যরা তওবা করেছিল। কুফাবাসীরা অনুতপ্ত হয়েছিল। ইয়াজিদের সিংহাসন ভেংগে পরেছিল। তাইতো বলা হয় – ইসলাম জিন্দা হোতা হায় হার কারবালাকে বাদ।